অনুসন্ধান ফলাফলগুলি - Philippines
ফিলিপাইন
থাম্ব|274x274পিক্সেল|কেসোন নগরী ফিলিপাইন ( ''পিলিপিনাস্'') সরকারীভাবে ফিলিপাইন প্রজাতন্ত্র ( ''রেপুব্লিকা নাং পিলিপিনাস্'') দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি দ্বীপপুঞ্জীয় রাষ্ট্র। এটি পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে ৭,৬৪১টি দ্বীপ নিয়ে গঠিত, যাদের মোট আয়তন প্রায় ৩ লক্ষ বর্গকিলোমিটার (বাংলাদেশের আয়তনের দ্বিগুণ)। দ্বীপগুলিকে উত্তর থেকে দক্ষিণ দিকে মোটা দাগে তিনটি প্রধান ভৌগোলিক বিভাগে ভাগ করা যায়। এগুলি হল উত্তরের লুসোন, মধ্যভাগের ভিসায়াস ও দক্ষিণের মিন্দানাও। ফিলিপাইনের পশ্চিমে ও উত্তরে দক্ষিণ চীন সাগর, পূর্বে ফিলিপাইন সাগর এবং দক্ষিণে সেলিবিস সাগর। উত্তরে তাইওয়ান, উত্তর-পূর্বে জাপান, পূর্বে ও দক্ষিণ-পূর্বে পালাউ, দক্ষিণ-পশ্চিমে মালয়েশিয়া, পশ্চিমে ভিয়েতনাম ও উত্তর-পশ্চিমে চীনের সাথে ফিলিপাইনের সামুদ্রিক সীমান্ত আছে। লুসোন দ্বীপে অবস্থিত ম্যানিলা ফিলিপাইনের রাজধানী শহরে। ম্যানিলা মহানগরীর অভ্যন্তরে অবস্থিত কেসোন দেশটির সর্বাধিক জনবহুল শহর। এছাড়া কালোকান, দাভাও, জাম্বোয়াঙ্গা ও সেবু আরও কয়েকটি প্রধান নগরী। ফিলিপিনের জলবায়ু ক্রান্তীয় বা গ্রীষ্মমণ্ডলীয় প্রকৃতির; বছরের পুরোটা জুড়েই আবহাওয়া তপ্ত ও আর্দ্র থাকে। মে থেকে নভেম্বর বর্ষাকাল, আর ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল শুষ্ক মৌসুম।১০ কোটি ১৯ লক্ষ অধিবাসীবিশিষ্ট ফিলিপাইন জনসংখ্যার বিচারে বিশ্বের দ্বাদশ (১২শ) বৃহত্তম দেশ। ফিলিপাইনের অধিবাসীদেরকে ফিলিপিনো বলে। প্রায় সব ফিলিপিনো আদিতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মালয় উপদ্বীপ থেকে আগমন করেছে। এখানে বহু বিচিত্র ভাষা, ধর্ম ও সংস্কৃতির অধিকারী ১২০টিরও বেশি নৃগোষ্ঠীর বাস। সংস্কৃতিতে স্পেনীয়, মার্কিন ও আদিবাসী ঐতিহ্যের মিলন ঘটেছে। রন্ধনশৈলীতে স্পেনীয়, চীনা ও মালয় রন্ধনশৈলীর প্রভাব পড়েছে। ফিলিপিনো (তাগালোগ ভাষার একটি রূপ) ও ইংরেজি দুইটি প্রধান ভাষা, এছাড়া সেবুয়ানো ও ইলোকানো ভাষাগুলিতে বহু লোক কথা বলে। দেশের সিংহভাগ (৮০%) অধিবাসী রোমান ক্যাথলিক মণ্ডলীয় খ্রিস্টান; প্রায় ১০% অধিবাসী মুসলমান, যারা মূলত মিন্দানাও অঞ্চলে বাস করে। দেশটি একটি রাষ্ট্রপতিশাসিত গণতন্ত্র, যেখানে রাষ্ট্রপতি একাধারে রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকার-প্রধান। ফিলিপাইন একটি মিশ্র-অর্থনীতির উন্নয়নশীল দেশ এবং আসিয়ান (দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলির সংঘ) ও এপেক-এর (এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংঘ) সদস্য। দেশটিতে রয়েছে খনিজ, কাঠ ও মৎস্যসম্পদের প্রাচুর্য। এছাড়া দেশটি বিভিন্ন কৃষিদ্রব্য যেমন চাল, ভুট্টা ও চিনির একটি প্রধান উৎপাদক।
আদিতে ফিলিপাইন বিভিন্ন আদিবাসী উপজাতিদের (৫০ হাজার বছর আগে নেগ্রিতো, পরবর্তীতে বিভিন্ন অস্ট্রোনেশীয় উপজাতি) আবাস ছিল। মালয় জাতির লোকেরা আজ থেকে ২০০০ বছর আগে এখানে আসতে শুরু করে। তারপর এখানে সর্বপ্রাণবাদ, হিন্দুধর্ম, ইসলাম ও বৌদ্ধধর্মভিত্তিক বিভিন্ন দ্বীপরাজ্য গড়ে ওঠে। থাং ও সুং রাজবংশের সময় চীনের সাথে ব্যাপক বাণিজ্যের কারণে এখানে চীনা বংশোদ্ভূত লোকেরাও বসবাস শুরু করে। স্পেনের কাস্তিলের রাজার পৃষ্ঠপোষকতায় পর্তুগিজ অভিযাত্রী ফের্দিনান্দ মাগেলানের আগমন দেশটিতে ইউরোপীয় প্রভাবের সূচনা করে। ১৫৬৫ সালে দ্বীপপুঞ্জটি স্পেনীয় ঔপনিবেশিক সাম্রাজ্যে অংশে পরিণত হয় ও স্পেনের কাস্তিলের রাজা ২য় ফেলিপে-র নামে এর নাম দেওয়া হয় ফিলিপাইন। এরপর এটি প্রায় ৩০০ বছর স্পেনের অধীনে ছিল, যেসময় লাতিন আমেরিকা ও স্পেন থেকে অভিবাসীদের আগমন ঘটে। ১৯শ শতকের শেষ দিকে ফিলিপিনোরা স্পেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা জন্য সংগ্রাম শুরু করে। ১৮৯৬ সালে ফিলিপাইন বিপ্লব শুরু হয় এবং বিপ্লবীরা প্রথম ফিলিপাইন প্রজাতন্ত্রের ঘোষণা দেয়। কিন্তু ১৮৯৮ সালে স্পেন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যুদ্ধের পরিণামে স্পেনের পরাজয় হলে ফিলিপাইন মার্কিনীদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায় ও পরবর্তী চার দশকেরও বেশি সময় ধরে মার্কিনদের অধীনে থাকে। ফিলিপিনোরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা সংগ্রামে পেরে ওঠেনি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ১৯৪২ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত জাপান ফিলিপাইনকে দখলে নিয়ে নেয়। যুদ্ধের পরে ১৯৪৬ সালে ফিলিপাইন একটি স্বাধীন গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। স্বাধীনতা-উত্তর ফিলিপাইনের ইতিহাস রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক সামর্থ্যপ্রমাণের পরীক্ষা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের (টাইফুন ও জলবায়ু পরিবর্তন) ইতিহাস। ১৯৬৫ সালে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত ও ১৯৬৯ সালে পুনর্নির্বাচিত হলেও ১৯৭২ সালে ফের্দিনান্দ মার্কোস এক সামরিক শাসনের সূচনা করেন এবং ১৯৮৬ সালে জনতার বিপ্লবে এর অবসান ঘটে। কোরাসোন আকিনো নতুন গণতান্ত্রিক সরকারের প্রধান হন। তবে সাম্যবাদী বিদ্রোহী ও মিন্দানাওয়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী মুসলমান বিদ্রোহীরা সরকারের সাথে সংঘাতে লিপ্ত হয়। উইকিপিডিয়া দ্বারা উপলব্ধ